ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত পরিত্যাগ করল সে যেন কুফরি করল (সহিহ ইবনে হিব্বান)। অর্থাৎ সালাতের প্রতি গুরুত্বারোপ না করা কুফরির সমতুল্য। পৃথিবীতে থাকাকালীন যারা সালাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তাদেরকে সিজদা করতে বলা হবে, কিন্তু তারা তা করতে পারবে না। ফলে তারা চরমভাবে অপমানিত হবে। অবশেষে তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০১
শিপন মিয়া মুদি ব্যবসায়ী। তিনি বিক্রয়ে পরিমাপে কম দেন। জনাব আশফাক সাহেব তাকে বলেন, এ ধরনের কাজ ইসলাম বহির্ভূত। অতএব ব্যবসায় পরিশুদ্ধতার জন্য তোমাকে এগুলো পরিহার করতে হবে। কেননা রাসুল (স.) বলেছেন, “সত্যবাদী ব্যবসায়ীদের হাশরে স্থান হবে শহিদদের সাথে।”
ক. প্রতারণা কী?
খ. “পরিমাণে কম দেওয়া গর্হিত কাজ” বুঝিয়ে লেখ।
গ. শিপন মিয়ার কাজটি ইসলামের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জনাব আশফাক সাহেবের বক্তব্যের যথার্থতা বিশ্লেষণ কর
০১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। প্রকৃত অবস্থা গোপন রেখে ফাঁকি বো ধোঁকার উপর ভিত্তি করে নিজ স্বার্থ হাসিল করাকে প্রতারণা বলে।
খ। পরিমাণে কম দেওয়া প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তা গর্হিত কাজ। প্রতারণা মিথ্যারই এক বিশেষ রূপ। প্রতারণা বিভিন্নভাবেই হয়ে থাকে। মানুষকে ঠকানো, ফাঁকি দেওয়া, ওজনে কম দেওয়া ইত্যাদির নাম প্রতারণা। প্রতারণা ইমান পরিপন্থি কাজ, প্রতারণা করাকে ইসলামে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই পরিমাণে কম দেওয়ার মাধ্যমে প্রতারণা করা হয় বিধায় তা অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দিত কাজ।
গ। শিপন মিয়ার কাজটি প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। প্রতারণা হলো আখলাকে যামিমাহ বা খারাপ চরিত্রের অন্যতম একটি দিক। এর অর্থ ঠকানো বা ফাঁকি দেওয়া। এটি মিথ্যাচারের একটি বিশেষ রূপ। ইসলামি পরিভাষায় প্রকৃত অবস্থা গোপন রেখে ফাঁকি বা ধোঁকার ওপর ভিত্তি করে নিজ স্বার্থ হাসিল করাকে প্রতারণা বলা হয়। প্রতারণা। নানাভাবে হতে পারে। যেমন ওজনে কম দেওয়া, পণ্যদ্রব্যের দোষ গোপন করা, ভালো জিনিস দেখিয়ে খারাপ জিনিস দেওয়া, ভেজাল মেশানো, পণ্যে কেমিক্যাল দেওয়া ইত্যাদি। প্রতারণা অত্যন্ত গর্হিত ও ঘৃণিত কাজ।
উদ্দীপকে শিপন মিয়ার কাজে এই বিষয়টিই লক্ষ্য করা যায়। উদ্দীপকে দেখা যায়, শিপন মিয়া মুদি ব্যবসায়ী। পণ্য বিক্রয়ের সময় সে পরিমাপে কম দেয়। পরিমাপে কম দেওয়ার মাধ্যমে সে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কেননা ওজনে কম দেওয়া প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে ক্রেতাকে ফাঁকি বা ধোঁকা দেওয়া হয়। আর প্রতারণা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। প্রতারণা ইমান পরিপন্থি কাজ। প্রতারণা করে কেউ মুসলিম থাকতে পারে না।
রাসুল (স.) বলেছেন, যে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয় (তিরমিযি)। প্রতারণাকারী মুনাফিক। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চিতভাবেই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে (সুরা আন-নিসা: ১৪৫)। সুতরাং শিপন মিয়ার কাজটি ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গর্হিত এবং হারাম।
ঘ। জনাব আশফাক সাহেবের বক্তব্যটি যথার্থ। ব্যবসায়-বাণিজ্য একটি পবিত্র পেশা। আমাদের প্রিয় নবি (স.) ও ব্যবসা করেছেন। সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী দুনিয়া ও আখিরাতে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। হাদিস শরিফে রাসুল (স.) সৎ ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে ঘোষণা দেন যে, তাঁরা কিয়ামতের দিন শহিদগণের সাথে অবস্থান করবে। উদ্দীপকে জনাব আশফাক সাহেবের বক্তব্যে এই বিষয়েরই প্রতিফলন ঘটেছে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, মুদি ব্যবসায়ী শিপন মিয়া পণ্য বিক্রয়ের সময় ওজনে কম দেওয়ার মাধ্যমে প্রতারণার আশ্রয়গ্রহণ করে। এই অবস্থা দেখে আশফাক সাহেব তাকে প্রতারণা পরিহার করতে বলেন। অতঃপর রাসুল (স.) এর একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দেন যে, রাসুল (স.) বলেছেন, “সত্যবাদী ব্যবসায়ীদের হাশরে স্থান হবে শহিদদের সাথে।” তার এ বক্তব্যটি যথার্থ। কেননা, ইবনে মাজাহ শরিয়তের একটি হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, “বিশ্বস্ত, সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন শহিদগণের সঙ্গে থাকবেন।” (ইবনে মাজাহ) বস্তুত সেদিন তাঁদের কোনো ভয় ও চিন্তা থাকবে না। বরং তাঁরা সেদিন আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ লাভ করে ধন্য হবেন।
শহিদগণ হলেন ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গকারী ব্যক্তি। আল-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা তাঁদের জন্য জান্নাতের ঘোষণা প্রদান করেছেন। সৎ ব্যবসায়ীগণও কিয়ামতের দিন শহিদগণের সঙ্গী হবেন। তাঁরাও শহিদগণের ন্যায় জান্নাতে প্রবেশ করবেন। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, আশফাক সাহেবের বক্তব্যটি যথার্থ।
ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০২
গোলাম মাওলা হালাল-হারাম মেনে জীবনের প্রত্যেকটি কর্ম সাধন করেন। দুনিয়ার কোনো শক্তি কিংবা আদর্শকে তিনি আল্লাহর শক্তি কিংবা আদর্শের ওপর স্থান দেন না। প্রত্যেকটি কাজ করার পূর্বে আল্লাহর দেয়া নির্দেশনা অনুসরণের চেষ্টা করেন।
ক. ইসলামি বুনিয়াদি আমল বলতে কী বোঝায়?
খ. তাকওয়া শব্দের অর্থ কী?
গ. গোলাম মাওলার কাজে ইসলামের কোন বিষয়টির প্রভাব রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সমাজকে সুন্দর করার জন্য উক্ত বিষয়টির কোনো গুরুত্ব আছে কি? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও।
০২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। তাকওয়া শব্দের অর্থ আল্লাহভীতি।
খ। সালাত, জাকাত, সাওম ও হজ এই চারটি বিষয়ের ওপর আমল করাকে ইসলামি বুনিয়াদি আমল বলে। ইসলামের বুনিয়াদের মধ্যে প্রথমটি হলো ইমান যা মানুষের অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত। এটি ছাড়া বাকি ৪টি বিষয়ের ওপর আমল করা হলো ইসলামের বুনিয়াদি আমল। এ বিষয়গুলোর কোনো একটিকে অস্বীকার করলে সে কাফির হয়ে যায়। উক্ত বিষয়গুলোর ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে যেভাবে বলা হয়েছে এবং রাসুল (সা.) তার নবুয়তের জীবনে যেভাবে চলার জন্য হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়েছেন, সেভাবে এর ওপর আমল করতে হবে। তাহলেই প্রকৃত মুমিন হিসেবে জীবন সার্থক হবে।
গ। গোলাম মাওলার কাজে ইসলামের তাকওয়ার প্রভাব রয়েছে। ‘তাকওয়া’ শব্দের অর্থ- ভয় করা, বিরত থাকা, আত্মরক্ষা করা। আল্লাহ তায়ালার ভয়ে সব ধরনের অন্যায় ও পাপকাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করাকে তাকওয়া বলে। যিনি তাকওয়া অবলম্বন করেন তাকে বলা হয় মুত্তাকি বা তাকওয়াবান। একজন মুত্তাকি আল্লাহ তায়ালা ও রাসুল (স.) এর পূর্ণ আনুগত্য করেন এবং ইসলাম পরিপন্থি কোনো কাজ করেন না। গোলাম মাওলার কর্মকাণ্ডে এরই প্রভাব লক্ষণীয়।
উদ্দীপকের গোলাম মাওলা হালাল-হারাম মেনে জীবনের প্রত্যেকটি অর্থনৈতিক কার্য সাধন করেন। দুনিয়ার কোনো শক্তি কিংবা আদর্শকে তিনি আল্লাহর শক্তি কিংবা আদর্শের উপর স্থান দেন না। প্রত্যেকটি কাজ করার পূর্বে আল্লাহর দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণের চেষ্টা করেন। গোলাম মাওলার এসব কর্মকান্ডে তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কেননা তার প্রত্যেকটি কর্মকান্ডে আল্লাহভীতির বিষয়টি লক্ষণীয়।
তাছাড়া তাকওয়ার প্রভাবে তিনি আল্লাহর শক্তি ব্যতীত অন্য কোন শক্তির কাছে নতি স্বীকার করেন না। আবার প্রত্যেকটি কাজ করার পূর্বে তিনি আল্লাহর নির্দেশ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে মেনে চলার চেষ্টা করেন, যা তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
ঘ। হ্যাঁ, সমাজকে সুন্দর করার জন্য উক্ত বিষয়টি তথা তাকওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজের ক্ষুদ্রতম ও অনিবার্য অংশ হলো ব্যক্তি। ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক মানুষের ভালো বা খারাপ হওয়ার ওপরে সমাজের ভালো বা খারাপ হওয়া নির্ভর করে। আদর্শ সমাজের জন্য আদর্শ মানুষের প্রয়োজন। তাকওয়া ব্যক্তিকে আদর্শ ও সৎ মানুষে পরিণত করে। ব্যক্তিজীবনের মতো সমাজজীবনেও তাই তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। উদ্দীপকে দেখতে পাই, গোলাম মাওলা হালাল-হারাম মেনে চলেন।
আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করেন না। তাঁর এ কাজটি তাকওয়া, যা সমাজ সুন্দর করতে পারে। গোলাম মাওলার মধ্যে যার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। তাকওয়া সমাজে পরিপূর্ণ শান্তি ও নিখুঁত শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর সমাজ গঠনে যেসব গুণ, বৈশিষ্ট্য ও উপাদান প্রয়োজন, একজন তাকওয়া অবলম্বনকারীর মধ্যে তা পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান থাকে। তাই অতি সহজেই সুন্দর সমাজ গড়ে ওঠে।
কাজকর্ম ও আচার- আচরণে আন্তরিক না হলে, সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা থাকে না। যার মধ্যে তাকওয়া বিদ্যমান থাকে সে যেমন কোনো অন্যায় কাজ করতে পারে না, তেমনি সমাজের কোনো অনিষ্ট ও অকল্যাণ হয় এমন কোনো কাজও করতে পারে না। সামাজিক মূল্যবোধ জলাঞ্জলি দিতে পারে না। সমাজে ন্যায়বিচার ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য তাকওয়ার বিকল্প নেই। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০৩
জনাব মামুন একজন সৎ মানুষ। মানুষের সাথে তিনি সর্বদা ভালো ব্যবহার করেন। কেউ তার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করলেও তিনি তা হাসিমুখে গ্রহণ করেন। দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদে মুচড়ে না পড়ে দৃঢ়তার সাথে তা সহ্য করেন। তার এরূপ আচরণে পরম শত্রুরাও তার বন্ধু হয়ে যায়।
ক. ‘ইহসান’ শব্দের অর্থ কী?
খ. জিকিরের মাধ্যমে কীভাবে মানসিক প্রশান্তি লাভ হয়?
গ. জনাব মামুনের মধ্যে ইসলামের কোন গুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে? ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. জনাব মামুনের এরূপ আচরণের সামাজিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।
০৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। ইহসান শব্দের অর্থ সুন্দর করা, কষ্ট দূর করা, অনুগ্রহ করা, উপকার করা ইত্যাদি।
খ। জিকিরের মাধ্যমে মানুষের মন হালকা হওয়ার মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি লাভ হয়। জিকির করার মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে এক অদৃশ্য যোগসূত্র তৈরি হয়। ফলে বান্দার অস্থির ও চঞ্চল চিত্ত স্থির হয় এবং আল্লাহর অনুগ্রহে পরিতৃপ্ত হয়ে প্রশান্তি লাভ করে। জিকিরের মাধ্যমে ব্যক্তি সবসময় নিজের কাছে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করে। আল্লাহর ক্ষমতা ও রহমতের ব্যাপারে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। এভাবেই জিকির মানসিক প্রশান্তি দান করে।
গ। জনাব মামুনের মধ্যে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সবরের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সবর শব্দের অর্থ ধৈর্যধারণ করা। দুঃখ-কষ্ট ও বিপদে-আপদে বিচলিত না হয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে দৃঢ়তার সাথে তা সহ্য করাকে সবর বলা হয়। বিপদে ধৈর্যধারণ করা মুমিনের চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, যা মামুন সাহেবের মধ্যে লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকের মামুন সাহেব একজন সৎ মানুষ। কেউ তার সাথে খারাপ ব্যবহার করলেও তিনি তা হাসিমুখে গ্রহণ করেন এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন। দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদে মুষড়ে না পড়ে দৃঢ়তার সাথে তা সহ্য করেন। তাঁর এরূপ আচরণে পরম শত্রুরাও তার বন্ধু হয়ে যায়।
মামুন সাহেবের এ ধরনের আচরণে সবরের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কোনো মুমিন ব্যক্তি যখন সবর করেন তখন আল্লাহ তায়ালা তার ওপর সন্তুষ্ট হন। পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে- ‘আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন’ (সুরা আলে ইমরান: ১৪৬)। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদে ভেঙে না পড়ে মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্যধারণ করা।
ঘ। জনাব মামুনের আচরণ অর্থাৎ সবরের সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। সবর মুমিনের চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সবরের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সামাজিক শান্তি, সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবরের প্রয়োজন। সমাজের সদস্যদের পারস্পরিক লেনদেন ও আচরণে সবর অবলম্বন করা না হলে সামাজিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। সবরের অভাবে ব্যক্তি নিজের ক্রোধ ও রাগ প্রশমিত করতে পারে না। ফলে পারস্পরিক সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখা যায় না।
সমাজের সদস্যরা পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল হলে সমাজ উন্নত হয়। সমাজের সমৃদ্ধি ও সচ্ছলতা নিশ্চিত হয়। নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন ধৈর্যের। ধৈর্যধারণ না করার কারণে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিপর্যয় নেমে এসেছে অনেকবার। সেজন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণের জন্যও ধৈর্যের অনুশীলন অনিবার্য। সুতরাং জনাব মামুনের আচরণের তথা সবরের সামাজিক গুরুত্ব অত্যধিক। যেকোনো সামাজিক সমস্যা বা সংকট মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে সবর বা ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে। এতে দুনিয়ার জীবনে শান্তি ও পরকালে মুক্তি লাভ করা যাবে।
আরও দেখুন: ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য়অধ্যায় সৃজনশীল আর্টিকেল টি ভালো লাগলে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।