ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: ইসলামি পরিবার উদ্দেশ্যবিহীন কোনো সামাজিক সংগঠন নয় বরং এটি হলো পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ বিদ্যালয়। এ পরিবার শিশুর আদব-কায়দা ও চরিত্র গঠনে ভূমিকা পালন করে। এখানে স্নেহ, মমতা, ভক্তি, শ্রদ্ধা, সহানুভূতি, সমবেদনা, উদারতা, ত্যাগসহ সম্ভাব্য সব মানবীয় গুণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।


ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০১

ফজর আলী ও রজব আলী দুই ভাই। ফজর আলী সামান্য পড়ালেখা শিখে শহরের একটি কারখানায় স্বল্প বেতনে চাকরি নিয়েছে। নিজের খরচ মিটানোর পর কিছু টাকা সে পিতা-মাতার জন্য বাড়িতে পাঠায়। টাকা পেয়ে তার পিতা-মাতা খুশি হন। অপরদিকে রজব আলী মোটেও পড়ালেখা শিখেনি। সে প্রতিদিন বখাটে ছেলেদেরে সাথে আড্ডা দেয়। এক পর্যায়ে সে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। একদিন বাড়ি ফিরে নেশার টাকা না পেয়ে ছোট ভাইকে মারধর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে তার পিতা রজব আলীকে পুলিশে সোপর্দ করে।

ক. আধুনিক রসায়নের জনক কে?
খ. ইসলামি পরিবার বলতে কী বোঝ?
গ. ফজর আলীর কর্মকাণ্ডে পারিবারিক জীবনের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘নৈতিক শিক্ষার অভাবই রজব আলীর এই পরিণতির জন্য দায়ী’- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

০১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক। জাবির ইবনে হাইয়ানকে আধুনিক রসায়নের জনক বলা হয়।

খ। যে পরিবার ইসলামি ভাবধারা, ইসলামের নীতিমালা অনুসারে গড়ে ওঠে তাকে ইসলামি পরিবার বলে। ইসলামি পরিবার সাধারণ পরিবারের মতোই সামাজিক সংস্থা। তবে ইসলামি পরিবারে সবসময় এবং সবক্ষেত্রে ইসলামের নীতি ও আদর্শ ক্রিয়াশীল থাকে। অর্থাৎ যে পরিবার ইসলামি ভাবধারা, ইসলামের নীতিমালা, অনুশাসন ও বিধিবিধান অনুসারে গড়ে ওঠে সেটাই ইসলামি পরিবার।

গ। ফজর আলীর কর্মকাণ্ডে পারিবারিক জীবনে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিকটি ফুটে ওঠেছে। ইসলামি পরিবারে মাতাপিতার প্রতি সন্তানকে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। মাতাপিতার জীবদ্দশায় তাদের প্রতি সন্তানের কর্তব্যসমূহ হলো- তাদরে সাথে সদাচরণ করা, তাদের অবাধ্য না হওয়া, তাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা, অসুস্থ হলে তাদের সেবাযত্ন ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। ফজর আলীর কর্মকাণ্ডে এ বিষয়টিই প্রফিলিত হয়েছে।

উদ্দীপকে দেখা যায় ফজর আলী সামান্য পড়ালেখা শিখে শহরের একটি কারখানায় স্বল্প বেতনে চাকরি নিয়েছে। নিজের খরচ মিটানোর পর কিছু টাকা সে পিতামাতার জন্য বাড়িতে পাঠায়। আর টাকা পেয়ে তার পিতা- মাতা খুশি হন। তার এরূপ কর্মকাণ্ডে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়টি ফুটে ওঠেছে। কারণ পিতামাতাকে সন্তুষ্ট ও খুশি রাখা তাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা, বিপদ-আপদে পাশে থাকা সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুতরাং ফজর আলীর কর্মকাণ্ডে পারিবারিক জীবনে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিকটি ফুটে উঠেছে।

ঘ। রজব আলীর এই পরিণতির জন্য নৈতিক শিক্ষার অভাবই দায়ী উক্তিটি যথার্থ। নৈতিক শিক্ষা বলতে নীতিবোধের শিক্ষাকে বোঝায়। যে শিক্ষার দ্বারা নীতি ও নৈতিকার অনুশীলন করা হয় তাকে নৈতিক শিক্ষা বলে। নৈতিকতা শিক্ষার অভাব ঘটলে মানুষ নীতি-নৈতিকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। রজব আলীর ক্ষেত্রে এ বিষয়টি লক্ষ করা যায়।

উদ্দীপকে দেখা যায় রজব আলী মোটেও পড়ালেখা শিখেনি। সে প্রতিদিন বখাটে ছেলেদের সাথে আড্ডা দেয়। এক পর্যায়ে সে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। একদিন বাড়ি ফিরে নেশার টাকা না পেয়ে ছোট ভাইকে মারধর করে। তার এরূপ কর্মকাণ্ডে নৈতিক শিক্ষার অভাব লক্ষ করা যায়। কারণ নেশাগ্রস্ত হওয়া, নেশার টাকার জন্য ছোট ভাইকে মারধর করা নীতি ও নৈতিকতা বিরোধী কাজ। আর নৈতিক শিক্ষার অভাব ঘটলেই কেবল মানুষ এরূপ কর্মকাণ্ড করে থাকে।উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, নৈতিক শিক্ষার অভাবই রজব আলীর এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী।


ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০২

রাকীবের এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। রাকীব ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করেছেন কিন্তু মেয়েদেরকে পড়া লেখা করান না। এমনকি ধর্মীয় জ্ঞানটুকুও শিক্ষা দেন না। তিনি মেয়েদেরকে অবহেলা করেন। রাকীবের প্রতিবেশী রায়হান সাহেব তাকে বললেন, মাতা-পিতার নিকট ছেলে মেয়ে সমান হওয়া উচিৎ। মহানবী (সা) কন্যা সন্তানকে অধিক ভালোবাসতেন।

ক. পরিবার কাকে বলে?
খ. পরিবারকে মানব শিশুর পরিচর্যাকারী ও লালন-পালন কেন্দ্র বলা হয় কেন?
গ. রাকীবের আচরণ শরিয়তের আলোকে কীরূপ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রায়হান সাহেবের উক্তিটি পর্যালোচনা করো।

০২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক। পরিবার হচ্ছে একটি স্থায়ী সংঘ, যেখানে সন্তানাদিসহ বা সন্তানবিহীন স্বামী-স্ত্রী একত্রে বসবাস করে তাকে পরিবার বলে।

খ। পরিবারই একটি শিশুকে আদর, ভালোবাসা, মায়া-মমতা দিয়ে লালন-পালন করে বড় করে তোলে। তাই এটি শিশুর পরিচর্যা কেন্দ্র। মানবশিশু অত্যন্ত অসহায় ও দুর্বল অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শিশু নিজের দায়িত্ব নিতে পারে না। এ পুরো সময়েই মাতাপিতা তাদের হৃদয়নিংড়ানো ভালোবাসা, যত্ন, আদর ও মায়া-মমতা দিয়ে সন্তানের পরিচর্যা করেন। তাই পরিবারকে বলা হয় শিশুর পরিচর্যা ও লালন-পালনকেন্দ্র।

গ। রাকীবের আচরণ শরিয়তের আলোকে মোটেও ঠিক নয় বরং জঘন্য। পরিবারে ছেলের থেকে মেয়ের অধিকার কোনো অংশে কম নয়। বরং কন্যাসন্তানের ওপর আল্লাহর রহমত বেশি হয়। ইসলামি পরিবারে কন্যাসন্তানকে বেশি আদর করতে হবে। তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। রাসুল (স) বলেন, যে ব্যক্তির কন্যাসন্তান আছে আর যে তাকে জীবিত কবর দেয়নি, তাকে লাঞ্ছিত করেনি এবং তার চেয়ে ছেলে শিশুকে বেশি ভালোবাসেনি আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন (আবু দাউদ)।

পুত্রসন্তানের ওপর রাসুল (স) কন্যার অগ্রাধিকার প্রদান করেছেন। ধর্মীয় শিক্ষা, ধর্মানুশীলনের অধিকারও কন্যাসন্তানের রয়েছে। তাই তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা পিতার দায়িত্ব। তাছাড়া কন্যাসন্তানকে গালিগালাজ করা এবং লাঞ্ছিত করার ব্যাপারে ইসলামে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু রাকীবের কর্মকান্ড এর বিপরীত।

উদ্দীপকের রাকীবের এক ছেলে এবং তিন মেয়ে। তিনি ছেলেকে স্কুলে পড়ানোর প্রয়োজন মনে করলেও মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেন না। এমনকি ইসলামি জ্ঞানটুকুও শিক্ষা দেন না। মেয়েদেরকে অবহেলা করেন। কন্যাসন্তানের প্রতি এরূপ আচরণের প্রতি ইসলামি শরিয়তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সুতরাং কন্যাসন্তানের প্রতি রাকীবের আচরণ ইসলামের বিধান বহির্ভূত ও জঘন্য।

ঘ। রায়হান সাহেব বললেন, মাতাপিতার নিকট ছেলেমেয়ে সমান হওয়া উচিত। তার এ উক্তিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। পিতামাতার কাছে সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক উভয়েই সমান। উভয়ে একই পিতামাতার থেকে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু আমাদের সমাজে মেয়েকে বোঝা মনে করা হয়। অনেক পিতামাতা মেয়েসন্তান হওয়াকে অভিশাপ মনে করেন। অধিক কন্যাসন্তান হলে লজ্জাবোধ করেন। অথচ প্রিয়নবি (স) কন্যাদের বেশি আদর করতেন। তিনি বাড়ি থেকে কোথাও গেলে সবশেষে কন্যা ফাতেমার সাথে দেখা করতেন। আবার বাড়ি ফিরে আগে ফাতেমার সাথে, দেখা করতেন।

নবিজির জীবনে আরও অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে কন্যাসন্তানের স্নেহের ব্যাপারে। রাসুল (স) বলেন, যে আমার ফাতেমাকে কষ্ট দিল সে আমাকে কষ্ট দিল, আর যে আমাকে কষ্ট দিল সে আল্লাহকে কষ্ট দিল। রাসুল (স) পুত্রসন্তানের ওপর কন্যাসন্তানের অগ্রাধিকার দিয়ে বলেন, ‘ছেলে সন্তানের পূর্বে মেয়ে সন্তানকে উপহার দেবে।’

কন্যাসন্তানের প্রতি সদাচার করার পুরস্কারের বিষয়ে নবি (স) বলেন, ‘যে ব্যক্তির মেয়ে সন্তান আছে, আর সে তাকে জীবিত কবর দেয়নি, তাকে লাঞ্ছিত করেনি এবং তার চেয়ে ছেলে শিশুকে বেশি ভালোবাসেনি- আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ কোনো কারণে কন্যা যদি স্বামী পরিত্যন্তা হয় কিংবা বিধবা বা অসহায় অবস্থায় পড়ে, তাকে সাদরে গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় আশ্রয় ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করাও পিতার অবশ্য কর্তব্য।

এ প্রসঙ্গো হাদিসে এসেছে কন্যা যদি তোমার নিকট অসহায় হয়ে ফিরে আসে তবে তার জন্য খরচ করাই তোমার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সাদকা। সার্বিক আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, ইসলামে কন্যাসন্তানের প্রতি যেমন আচরণ করার নির্দেশ রয়েছে তার আলোকে রায়হান সাহেবের মন্তব্যটি যথার্থ।


ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ০৩

ক্ষণস্থায়ী এ পৃথিবীতে সন্তানের একান্ত আপন-জনের সন্তুষ্টির মাধ্যমে সন্তানরা সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে। শুধু তাই নয়, তাদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে মহানবি (স) বলেন “মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত”।

ক. সমাজ জীবনের প্রাথমিক ইউনিট কী?
খ. ইসলামি পরিবার একটি আদর্শ পরিবার বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপদে একান্ত আপনজন বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে? তা আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত হাদিসের আলোকে সন্তানের করণীয় সন্তানের প্রতি তাদের দায়িত্ব কর্তব্য- বর্ণনা কর।

০৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক। সমাজ জীবনের প্রাথমিক ইউনিট পরিবার।

খ। ‘ইসলামি পরিবার একটি আদর্শ পরিবার’। মন্তব্যটি যথার্থ।
বৃহত্তর সমাজ জীবনের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান পরিবার। পারিবারিক সুখশান্তির জন্য যেমন পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হওয়া আবশ্যক, তেমনি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রেমপ্রীতি, সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা অপরিহার্য। একটি আদর্শ পরিবার গঠনের জন্য যেসব উপাদান থাকা প্রয়োজন তার সবকিছুই ইসলামে বিদ্যমান। এজন্যই বলা হয় যে, ইসলামি পরিবার একটি আদর্শ পরিবার। নৈতিক ও মানবিক জীবন গঠনে ইসলামি পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম।

গ। উদ্দীপকে একান্ত আপনজন বলতে পিতামাতাকে বোঝানো হয়েছে। সন্তানের প্রতি তাদের দায়িত্ব কর্তব্য অনেক।ইসলামি পরিবারে মাতা-পিতা হলেন কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং একান্ত আপনজন। তাদের মাধ্যমেই পৃথিবীতে আসে মানবশিশু। তাদের মমতা ও ভালোবাসা শিশুকে ঘিরে রাখে। স্বভাবতই তারা সন্তানের প্রতি প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ পালন করেন। ইসলাম সন্তানের প্রতি এ দায়িত্ব পালনকে মাতা-পিতার জন্য বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। এ কারণেই তারা একান্ত আপনজন যা উদ্দীপকে বলা হয়েছে।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে সন্তান তার একান্ত আপজনের সন্তুষ্টির মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে। কেননা সন্তানের প্রতি পিতামাতার অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। পিতামাতার কাছে সন্তান অত্যন্ত আদরনীয় এবং খুবই স্নেহের পাত্র। এ সন্তানকে ভালোভাবে গড়ে তোলা ও ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পিতামাতার ওপর ন্যস্ত থাকে। মুসিলম পরিবারে সন্তান-ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পিতা তার ডান কানে অযান শুনাবেন এবং বাম কানে ইকামত দিবেন।

অতঃপর সপ্তম দিবসে তার নাম রাখবেন এবং আকিকা করবেন। ছেলে-সন্তানের জন্য দুটি এবং মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল বা ভেড়া আকিকা দিতে হয়। তারপর তাকে আদব কায়দা, লেখাপড়া, সালাত, সাওম ও ধর্মের আইনকানুন শিক্ষা দিবেন। সন্তান বিয়ের যোগ্য হলে পিতা তাকে বিয়ে দিবেন। এভাবেই পিতামাতা সন্তানের প্রতি তাদের কর্তব্যসমূহ পালন করবেন।

ঘ। উদ্দীপকে উল্লেখিত হাদিসে বলা হয়েছে যে, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত’। এ হাদিসের আলোকে সন্তানের করণীয় হলো মাতার খেদমত করা।

ইসলামে আল্লাহ তায়ালার পরেই পিতামাতার স্থান। মানুষ প্রথমে আল্লাহর নির্ধারিত কর্তব্যসমূহ সম্পাদন করবে। তারপর মাতাপিতার প্রতি দায়িত্ব পালন করবে। পৃথিবীর অন্য কোনো মানুষের দায়িত্ব মাতাপিতার দায়িত্বের ওপর প্রাধান্য পাবে না। আর ইসলামে মাতাপিতার প্রতি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই পরকালীন সফলতা লাভের ঘোষণা প্রদান হয়েছে। উদ্দীপকে উল্লেখিত হাদিসটি এরই ইঙ্গিত প্রদান করে। উদ্দীপকে উল্লিখিত হাদিসে বলা হয়েছে যে, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত’।

এ হাদিস দ্বারা বোঝানো হয়েছে, মাতার খেদমত করা করার মাধ্যমে সন্তান জান্নাত লাভ করতে পারে। বস্তুত এ হাদিস দ্বারা মাতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠেছে। মাতা সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন, সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে প্রসব করেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে দুগ্ধদান করেন এবং লালনপালন করেন। সন্তানের জন্য মায়ের এ বিপুল অবদানের কারণে কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রেও মাতাকে পিতার উপরে অগ্রাধিকার দিতেই এরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এজন্য উত্তম আচরণের সর্বাধিক হকদার হিসেবে মাতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং মাতার খেদমতে নিজেকে নিয়োগ করতে হবে। তবেই উত্ত হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী জান্নাত লাভ সম্ভব হবে।

পরিশেষে বলা যায়, মাতা হলেন উত্তম আচরণের সর্বাধিক হকদার। তাই আমাদের উচিত মাতাকে খেদমত করার মাধ্যমে জান্নাতের পথকে সুগম করা।


আরও দেখুন: ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
আরও দেখুন: ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
আরও দেখুন: ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৪র্থ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
আরও দেখুন: ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ১ম অধ্যায় MCQ (উত্তর সহ)

ইসলাম শিক্ষা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আর্টিকেল টি ভালো লাগলে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

Leave a Comment