বাণিজ্যের প্রকারভেদ আলোচনা কর: এক সময় মানুষের চাহিদা ছিল সীমিত, যার কারণে মানুষ নিজেই নিজের চাহিদা পূরণে সক্ষম হতো। কিন্তু দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি মানুষের জীবনে জটিলতা সৃষ্টি করায় বর্তমানে মানুষ অল্পতে সন্তুষ্ট থাকতে চায় না। দিন দিন তাদের চাহিদার তালিকা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়াও হয়েছে বিভিন্নমুখী।
বাণিজ্যের প্রকারভেদ আলোচনা কর
বাণিজ্য অত্যন্ত নিপুণভাবে উৎপাদিত পণ্য বিভিন্ন উৎস হতে সংগ্রহ করে ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে। নিচে বাণিজ্যের প্রকারভেদ ছকাকারে উপস্থাপন করে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো—
১. পণ্য বিনিময়: বিনিময় বাণিজ্যের প্রধান শাখা। এটি পণ্যদ্রব্যের মালিকানা পরিবর্তন করে। অর্থাৎ ক্রয়-বিক্রয় কাজ সম্পন্ন করে। তাই একে বাণিজ্যের ট্রেড বা ক্রয়-বিক্রয় কাজও বলা হয়ে থাকে। পণ্য বিনিময় অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক এ দু প্রকারের হয়ে থাকে। দেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয়কে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে। পক্ষান্তরে, দু বা ততোধিক দেশের মধ্যে আমদানি, রপ্তানি ও পুনঃরপ্তানির মাধ্যমে পণ্যদ্রব্যের বিনিময়কে বৈদেশিক বাণিজ্য বলে।
২. পরিবহন: পরিবহন পণ্যের স্থানগত অসুবিধা দূর করে গ্রাহকদের মধ্যে পণ্যদ্রব্য বিতরণ করে।
৩. গুদামজাতকরণ: গুদামজাতকরণের মাধ্যমে পণ্যের সময়গত বাধা অপসারণ এবং সময়গত উপযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে ভোক্তাগণ নিয়মিত পণ্য পেয়ে থাকে এবং উৎপাদকও অবিরতভাবে পণ্য উৎপাদন করতে পারে।
৪. বিমা: বিনিময়ের ক্ষেত্রে সর্বদা ঝুঁকি বিদ্যমান থাকে। বাণিজ্য বিমার মাধ্যমে এ ঝুঁকি হ্রাস করে বিনিময় সহজ করে তোলে।
৫. ব্যাংকিং: ব্যবসায়ের অর্থসংস্থানজনিত প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত করতে সাহায্য করে ব্যাংক। অর্থাৎ বাণিজ্য ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসায়ের পুঁজিসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে। অর্থের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে এটি ব্যবসায়কে গতিশীল করে।
৬. প্রচার: বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাণিজ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে পণ্য সম্পর্কে অবহিত করে বিক্রয় বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে সাহায্য করে।
উপসংহার: বাণিজ্যের শাখা অত্যন্ত বিস্তৃত। বাণিজ্য ব্যবসায়, ব্যাংক, পরিবহন, বিমা, গুদামজাতকরণ, বিজ্ঞাপন, মোড়কীকরণ ইত্যাদি দ্বারা পণ্য বিনিময়ের ব্যক্তিগত, স্থানগত, কালগত, অর্থগত ও ঝুঁকিগত বাধাসমূহ দূর করে ভোক্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য পৌছে দেওয়ার যাবতীয় কার্যক্রমের মধ্যেই বিস্তৃত।
✔ আরও দেখুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায়ের অবদান
✔ আরও দেখুন: ব্যবসায়ের কার্যাবলি আলোচনা কর
✔ আরও দেখুন: ব্যবসায়ের আওতা ও পরিধি বর্ণনা কর
✔ আরও দেখুন: ব্যবসায়ের আওতা ও পরিধি বর্ণনা কর
✔ আরও দেখুন: শিল্পের প্রকারভেদ আলোচনা কর
আশাকরি “বাণিজ্যের প্রকারভেদ আলোচনা কর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।