সমাজজীবনে প্রভাববিস্তারকারী উপাদান – সমাজবিজ্ঞান ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়

সমাজবিজ্ঞান ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়: সমাজজীবনকে মৌলভাবে প্রভাবিত করে এমন উপাদানের মধ্যে সমাজবিজ্ঞানীরা চারটি বিশেষ উপাদানকে অধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। এসব উপাদান সমাজজীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। বর্তমান অধ্যায়ে সমাজজীবনে প্রভাব বিস্তারকারী ভৌগোলিক উপাদান, বংশগতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক গোষ্ঠীর আলোচনা করা হয়েছে।


সমাজবিজ্ঞান ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়

প্রশ্ন-১. “পরিবেশ ও মানবজীবন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।”— ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মানবসমাজের সবকিছুই পরিবেশের প্রভাবে গড়ে ওঠে। মানুষ কোনো একটি পরিবেশের মাঝেই জন্মগ্রহণ করে। পরিবেশ একদিকে মানবজীবনকে গড়ে তোলে, অন্যদিকে মানব জীবনে কোনো পরিবর্তন হলে তা পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। একদিকে মানুষ পরিবেশের চাহিদা অনুসারে জীবন গঠনের চেষ্টা করে, অন্যদিকে জীবনযাত্রার প্রয়োজনে পরিবেশকে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে। এ থেকে বোঝা যায় যে, পরিবেশ ও মানবজীবন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

প্রশ্ন-২. “ভৌগোলিক উপাদান মানব প্রকৃতি ও দক্ষতার ওপর প্রভাব রাখে”—ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ভৌগোলিক উপাদান বিশেষ করে তাপমাত্রা মানব প্রকৃতি ও দক্ষতার ওপর প্রভাব রাখে। হানটিংটনের গবেষণায় লক্ষণীয় যে, ৪০ ডিগ্রি ফাঃ তাপমাত্রায় মানসিক দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায়। অত্যধিক তাপে মানুষ অস্বস্তিবোধ করে, মেজাজ খিটখিটে হয় এবং অল্প পরিশ্রমে মানুষ পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। আবার শীতকালে মানুষ বেশি পরিশ্রম করেও পরিশ্রান্ত হয় না। ক্ষুধা কমই অনুভূত হয় এবং দিনেও ঘুম কম আসে।

প্রশ্ন-৩. বিবাহ ও যৌনজীবনের ওপর কীভাবে ভৌগোলিক পরিবেশ প্রভাব বিস্তার করে?

উত্তর: মানুষের জৈবিক চাহিদা মূলত ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বাংলাদেশের মানুষের সাধারণত অল্প বয়সে যৌবনপ্রাপ্তির পেছনে ভৌগোলিক পরিবেশ দায়ী। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের মানুষ অল্প বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়, ফলে যৌনাকাঙ্ক্ষা বাড়ে । আবার শীতপ্রধান অঞ্চলের মানুষ তুলনামূলক বেশি বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয় । যৌনজীবন বস্তুত জৈবিক চাহিদা ও মানসিক চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। আবার বিবাহের ক্ষেত্রেও ভৌগোলিক পরিবেশ প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

প্রশ্ন-৪. রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রশাসন কীভাবে ভৌগোলিক উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়?

উত্তর: স্থানভেদে রাজনৈতিক পরিবেশ ভিন্ন হয় বলে রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রশাসন ভৌগোলিক উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়। ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কুর মতে, শীতল জলবায়ু স্বাধীনতার অনুকূলে। অপরপক্ষে উষ্ণ জলবায়ু দাসত্ব বা স্বৈরাচারী শাসনের অনুকূলে। তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় শীতপ্রধান দেশে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা এবং এশীয় সমাজে স্বৈরাচারী সরকারি নীতি দেখা যায়। তাই একথা সহজেই অনুমেয় যে, ভৌগোলিক পরিবেশ রাজনৈতিক জীবনকে স্থানভেদে প্রভাবিত করে।

প্রশ্ন-৫. পোশাক-পরিচ্ছদ ভৌগোলিক উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয় কীভাবে?

উত্তর: পোশাক-পরিচ্ছদ ভৌগোলিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয় কারণ জলবায়ু ও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদও বিভিন্ন প্রকার হয়। যেমন— শীতপ্রধান অঞ্চলে মোটা কাপড় বা গরম পশমি কাপড়ের ব্যবহার লক্ষণীয়।

কারণ সেখানে শীতের প্রকোপ কমাতে এ ধরনের পোশাক খুবই উপযোগী। আর নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে হালকা সুতি কাপড়ের ব্যবহার সর্বাধিক লক্ষ করা যায়। কারণ গরমে এ ধরনের পোশাক আরামদায়ক হয়। আবার মরু অঞ্চলে দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা হওয়ায় মানুষ পা অবধি লম্বা পুরো হাতার পোশাক ব্যবহার করে।

প্রশ্ন-৬. কুটিরশিল্প ও দৈনন্দিন আচার-অনুষ্ঠানের ওপর ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কুটিরশিল্প ও দৈনন্দিন আচার-অনুষ্ঠানের ওপর ভৌগোলিক প্রভাব অনস্বীকার্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঢাকার ডেমরা অঞ্চলে তাঁতিদের বাস এবং এখানেই বিখ্যাত ঢাকাই শাড়ি তৈরি হয়। অঞ্চলটি নদীবহুল এবং আবহাওয়া ঐ কুটিরশিল্প গড়ে ওঠার অনুকূল। মুর্শিদাবাদ ও রাজশাহীকে কেন্দ্র করে রেশমি শাড়ি শিল্প গড়ে উঠেছে। কারণ ঐ অঞ্চলে তুঁত গাছে রেশমি কীট জন্মাতে পারে।

বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের গৃহশিল্প দেখা যায়। যেমন— নোয়াখালী অঞ্চল নারিকেলের পিঠার জন্য বিখ্যাত। ফরিদপুর অঞ্চলের খেজুরের গুড়ের পিঠা, মুক্তাগাছার মণ্ডা, টাঙ্গাইলের চমচম ইত্যাদির খ্যাতির জন্য ভৌগোলিক কারণের সাথে ঐতিহ্য জড়িত। এসব উদাহরণে সুস্পষ্ট যে, কুটিরশিল্প ও দৈনন্দিন আচার-অনুষ্ঠানের ওপর ভৌগোলিক পরিবেশ তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

প্রশ্ন-৭. সভ্যতার উন্মেষে ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব কীভাবে ভূমিকা রাখে?

উত্তর: সভ্যতার উন্মেষে ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম। আমরা জানি, যেখানে খাদ্যের যোগান ও বসবাসের উপযোগী আবহাওয়া বর্তমান, সেখানে সভ্যতার গোড়াপত্তন সম্ভব। তাই জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ভর করে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের ওপর।

সভ্যতা সৃষ্টির জন্য মানুষের উদ্যম, কর্মশক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত কর্মশক্তিতে বলীয়ান ও উদ্যমী হয়। এ জলবায়ু কৃষির জন্য উপযোগী। ফলে বসতি স্থাপন তথা সভ্যতার উন্মেষ ও বিকাশে ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাব দেখা যায়।

প্রশ্ন-৮. জনসংখ্যার বণ্টনে ভৌগোলিক উপাদানের প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: জনসংখ্যার বণ্টনে ভৌগোলিক উপাদান গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ভর করে মানুষের মৌল চাহিদা পূরণের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের ওপর। সাধারণত যেখানে খাদ্যের যোগান ও বসবাসের উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান সেখানেই লোকজনের উপস্থিতি বেশি।

অর্থাৎ ভৌগোলিক আবহাওয়ার জন্যই লোকজন একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমনাগমন করে যা জনসংখ্যার বণ্টনকেই নির্দেশ করে। আবার যেখানে অনুকূল জলবায়ু, ভারসাম্যপূর্ণ ভৌগোলিক পরিবেশ বিদ্যমান সেখানেও লোকজনের আনা-গোনা বেশি হয়। সুতরাং বলা যায়, ভৌগোলিক উপাদানই জনসংখ্যাকে ভাগ বা বণ্টন করে থাকে।

প্রশ্ন-৯. অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে ভৌগোলিক উপাদানকে দায়ী করা হয় কেন?

উত্তর: ভৌগোলিক পরিবেশের বিভিন্নতা অপরাধ প্রবণতার পিছনে কাজ করে বলে ভৌগোলিক উপাদানকে অপরাধ প্রবণতার জন্য দায়ী করা হয়। অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে ভৌগোলিক উপাদানকে দায়ী করা হয়। সমতল ভূমি, নিচু ভূমি এবং পাহাড়ি অঞ্চল মূলত ভৌগোলিক পরিবেশের বিভিন্নতাকে নির্দেশ করে। যদিও সব ভৌগোলিক পরিবেশেই অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে তথাপি অঞ্চলভেদে অপরাধের প্রকৃতি, ধরন এবং মাত্রার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

প্রশ্ন-১০. বংশগতি বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: বংশগতি বা জৈবিক প্রভাব বলতে বোঝায় এমন কিছু জৈবিক ও মানসিক গুণ যা মানুষ পূর্ববর্তী বংশ বা পিতামাতা থেকে জন্মসূত্রে লাভ করে। মানুষ যেসব দৈহিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য পিতামাতা থেকে জন্মসূত্রে লাভ করে সেগুলো হলো লিঙ্গ, চোখ, চুলের রং, গায়ের রং, চুলের ধরন, হাত-পায়ের গড়ন, দেহের উচ্চতা, রক্তের শ্রেণি, জ্ঞান, মেধা, পারদর্শিতা ইত্যাদি। প্রাকৃতিক নিয়মে পূর্ববর্তী বংশধরদের দৈহিক ও মানসিক গড়ন পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।

প্রশ্ন-১১. বংশগতির প্রভাব বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর: ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠন ও পরিচালনায়, প্রতিভা ও দক্ষতা, আচার-ব্যবহার ও মানবিক অবস্থা, দৈহিক আকার- আকৃতিতে বংশগতির প্রভাব রয়েছে। সমাজ সভ্যতার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে মানুষের বংশগতি প্রভাব বিস্তার করে। জৈবিক উপাদানের প্রভাবে উত্তরাধিকারদের আচার-ব্যবহার, গুণাগুণ, স্বভাব, স্বাস্থ্য, মেজাজ, বুদ্ধির অধিকার হয়। সামাজিক খ্যাতি ও মর্যাদা লাভেও বংশগতির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।

প্রশ্ন-১২. মানুষের মেধার ওপর প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: মানুষের মেধার ওপর জৈবিক উপাদান প্রভাব বিস্তার করে। বস্তুত প্রতিভা ও দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে বংশগতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাল্টন-এর মতে, প্রতিভাবানদের নিয়ে গবেষণা করলে দেখা যায়, প্রতিভা ও দক্ষতা বংশগতিসূত্রে প্রাপ্ত।

প্রতিভাবান পিতামাতার ঘরেই প্রতিভাবান সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনি বলেন, মধ্যম মানের ব্যক্তিকে যতই অনুকূল ও উপযুক্ত পরিবেশ দেওয়া হোক না কেন প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সে ব্যর্থ হয়। অপরদিকে মেধাবী ও প্রতিভাবান লোকেরা অনেক প্রতিকূল পরিবেশেও জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

প্রশ্ন-১৩. অর্থনীতির ওপর সংস্কৃতির প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: অর্থব্যবস্থার ওপর সাংস্কৃতিক উপাদানের প্রভাব অপরিসীম। কৃষি কাজের সূচনার মাধ্যমে সমাজে যখন স্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয় তখন মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার আগমন ঘটে। আবার যখন শিল্প সমাজের উত্তরণ ঘটে তখন ব্যক্তিগত মালিকানার প্রভাবে অর্থব্যবস্থার উন্নয়নে মানুষ তৎপর হয়ে ওঠে। এর মূল কারণ হিসেবে সাংস্কৃতিক উপাদানই সক্রিয়ভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছে। কারণ অর্থব্যবস্থার উন্নয়ন ও গতি-প্রকৃতিকে সাংস্কৃতিক উপাদানই নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন-১৪. কৃৎকৌশল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতিয়ার যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, মানবশ্রম, ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিকে সামগ্রিকভাবে কৃৎকৌশল বলে। সমাজজীবনকে যে চারটি মৌল উপাদান বিশেষভাবে প্রভাবিত করে তার মধ্যে কৃৎকৌশল অন্যতম। যার অপর নাম সংস্কৃতি। মানবসৃষ্ট যেকোনো বস্তু ও অবস্তুগত উপাদান এ সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত।

কৃৎকৌশল মূলত সংস্কৃতির একটি বিশেষ রূপ, যার দুটি দিক রয়েছে। যথা— বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতি। কৃৎকৌশল যেমন বস্তুগত সংস্কৃতির একটি দিক, ঠিক তেমনি কাব্য, সাহিত্য, শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি অবস্তুগত সংস্কৃতির এক একটি রূপ।

প্রশ্ন-১৫. মানুষের জীবনে খেলার মাঠ কীভাবে ভূমিকা রাখে?

উত্তর: সামাজিকীকরণের মধ্য দিয়ে খেলার মাঠ মানবজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পরিবারের নির্দিষ্ট ও সীমিত গণ্ডি পেরিয়ে শিশু খেলার মাঠে প্রতিবেশীদের সংস্পর্শে আসে। খেলার মাঠে সঙ্গী-সাথী দ্বারা সে প্রভাবিত হয়। সে নিজেও অন্যান্যদের প্রভাবিত করে। এই সময়ে তার মধ্যে নেতৃত্ব, নিয়ম-শৃঙ্খলা, দায়িত্ব-কর্তব্য, সহনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলির সূচনা হয়। আর এভাবেই সমাজজীবনের রূপায়ণ ও গণ্ডি বৃদ্ধিতে খেলার মাঠের প্রভাবশালী ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন-১৬. শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে সঙ্গীদলের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণে খেলার সাথি ও সহপাঠীর ভূমিকা রয়েছে। এদের মাধ্যমেই সহযোগিতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, নেতৃত্ব প্রভৃতি গুণাবলি বিকশিত হয়। এ সঙ্গীদলের মধ্যে আবার কখনো দ্বন্দ্ব দেখা দেয় যা সমস্যা সমাধানে ও দ্বন্দ্ব নিরসন কৌশল আয়ত্তকরণে সহায়তা করে।

সঙ্গীদলের মাধ্যমে শিশু নিজের আচরণের ভালো কিংবা মন্দ দিকের গুণাবলি ও সমালোচনাগুলি শুনতে পায়। এ ধরনের সমালোচনা শিশুকে সমাজের কাঙ্ক্ষিত আচরণ শিক্ষা দেয়। সমবয়সী সঙ্গীদলের আচার-আচরণ প্রায় একই প্রকৃতির হয়। অতএব এটা বলা যায় যে, শিশুর সামাজিকীকরণে সঙ্গীদলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন-১৭. ‘ব্যক্তিজীবনে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে’—ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যক্তির সামাজিক জীবনে বৈচিত্র্য আনে। বিদ্যালয়ে শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এখানে সে বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রদের সংস্পর্শে আসে। শিক্ষক, কর্মচারী প্রমুখের সান্নিধ্যে আসে। এখানে সে নিয়ম-শৃঙ্খলা, দায়িত্ব-কর্তব্য ছাড়াও জ্ঞান বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। বিদ্যালয়ের শিক্ষা তাকে সমাজজীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। এই ধারণা তার জীবনবোধের রূপায়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখে। এভাবে ব্যক্তিজীবনে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


আশাকরি “সমাজজীবনে প্রভাববিস্তারকারী উপাদান – সমাজবিজ্ঞান ১ম পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়” আর্টিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে। সমাজবিজ্ঞান ১ম পত্র সকল অধ্যায় এর প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন।

Leave a Comment