সম্পদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর

সম্পদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর: সাধারণ অর্থে সম্পদ বলতে টাকা পয়সা ও ধনসম্পত্তিকে বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে ‘সম্পদ’ শব্দটি বিশেষ অর্থ নির্দেশ করে। মূলত যেসব দ্রব্যসামগ্রীর উপযোগ আছে, যার যোগান সীমাবদ্ধ এবং যা মানুষ তৈরি করে ও বিক্রয়যোগ্য তাই সম্পদ।

সম্পদের শ্রেণিবিভাগ: সাধারণ কথায়, সম্পদ বলতে টাকা পয়সা ও ধনসম্পদ প্রভৃতি বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে সম্পদ শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। সম্পদকে সাধারণত চার ভাগে ভাগ করা যায়।

সম্পদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর

১. ব্যক্তিগত সম্পদ: কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মালিকানায় যেসব সম্পদ রক্ষিত থাকে তাকে ব্যক্তিগত সম্পদ বলে। যেমন— নিজস্ব জমি, গাড়ি-বাড়ি, আসবাবপত্র, ব্যবসায়ের সুনাম ইত্যাদি। ব্যক্তিগত সম্পদ সম্পর্কে অধ্যাপক মার্শাল বলেন, মানুষের কর্মদক্ষতা ও গুণাগুণ হস্তান্তরযোগ্য না হলেও মানুষের জীবিকা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য এসব অভ্যন্তরীণ গুণাগুণ ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।

২. সমষ্টিগত সম্পদ: যেসব সম্পদ নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিমালিকানার অধীনে নয়, বরং সম্পদগুলো সরকার বা জনসাধারণের নিয়ন্ত্রণে থাকে তাকে সমষ্টিগত সম্পদ বলে অভিহিত করা হয়। এ ধরনের সম্পদগুলো হলো— রাস্তাঘাট, রেলপথ, পাঠাগার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। এ ধরনের সম্পদগুলোর উপর সমাজের সব জনসাধারণের সমান অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।

৩. জাতীয় সম্পদ: দেশের জনসাধারণের যেসব ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত সম্পদের অধিকার ভোগ করে থাকে, তাদের সমষ্টিকে জাতীয় সম্পদ বলে । এ জাতীয় সম্পদ হিসাবের সময় সরকারি ঋণের পরিমাণ ও বিদেশের নিকট থেকে পাওনা হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হয় । যেমন— রাষ্ট্রীয় ঋণ, রাষ্ট্রীয় পাওনা, স্বদেশ ও বিদেশের মালিকানাধীন সম্পদ ইত্যাদি।

৪. আন্তর্জাতিক সম্পদ: যেসব সম্পত্তির মালিকানা এককভাবে কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের নয়; বরং বিশ্বের সকল দেশ ও নাগরিকগণের সমান অধিকার রয়েছে এবং সম্পদের ব্যবহারের ওপর ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব সমগ্র দেশের ওপর অর্পিত থাকে, সেসব সম্পদকে আন্তর্জাতিক সম্পদ বলে। যেমন- সাগর, মহাসাগর, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও যান্ত্রিক আবিষ্কার।

উপসংহার: কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে উপযোগ, দুষ্প্রাপ্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা থাকতে হয়। এসব বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কোনো একটির অভাব হলে তাকে সম্পদ বলা যায় না। সম্পদের এ বৈশিষ্ট্যের কারণে সম্পদ বিভিন্ন ধরনের হতে দেখা যায়। এ বিভিন্ন ধরনের সম্পদকে সংরক্ষণের মাধ্যমে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে যেকোনো দেশ ও জাতি অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধন করতে সক্ষম হবে।


আরও দেখুন: মানুষ কীভাবে সীমিত সম্পদের সাহায্যে অসীম অভাব পূরণ করে তা আলোচনা কর
আরও দেখুন: অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ? ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
আরও দেখুন: বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর
আরও দেখুন: অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন কর্মপর্যায় আলোচনা কর
আরও দেখুন: সম্পদ কী? সম্পদের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

আশাকরি “সম্পদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।

Leave a Comment